• বিশেষ প্রতিবেদন

নীলফামারীতে চাষ হচ্ছে পুষ্টি সমৃদ্ধ চিয়া

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ১৫ জানুয়ারী, ২০২২ ১৫:৪১:৪৩

ছবিঃ সিএনআই

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ পুষ্টিতে ভরপুর দানাদার এক নতুন ফসলের নাম সুপারসিড চিয়া। যা মানবদেহে জোগান দেবে শক্তি, সাহস আর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। চিয়াসিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক ও ক্যাফিক অ্যাসিড নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট। ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা নতুন এ ফসলের জাত উদ্ভাবন করে নাম দিয়েছেন বাউচিয়া।

নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের শাহ্পাড়া গ্রামে কৃষক শাহজাহান মিয়া চাষ করছেন সুপারসিড চিয়া। মানবদেহের বিভিন্ন রোগের কার্যকরী মহৌষধ হিসেবে কাজ করে এ দানাজাতীয় চিয়া। ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হার্ড অ্যাটাকসহ ১০ ধরনের ঔষধিগুণ হয়েছে চিয়ায়। যা উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় পরীক্ষামূলকভাবে ২০ শতাংশ জমিতে আবাদ করা হচ্ছে চিয়া। ২০ শতাংশ জমিতে ফলন হবে ৪০ থেকে ৫০ কেজি। ৬০০ থেকে এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে চিয়া। ন্যায্যমূল্য পেলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে চিয়ার আবাদ হবে আশা চাষীদের।

জানা যায়, এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় কৃষকদের নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে চিয়া চাষে। লাতিন আমেরিকা ও ম্যাক্সিকোসহ ইউরোপের দেশগুলোতে উৎকৃষ্ট পুষ্টি ও ঔষধি ফসল হিসেবে চাষ হয়ে থাকে চিয়ার। শক্তি, সাহস ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খাদ্যতালিকায় চিয়া সিড বা বীজকে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করেন সেখানকার অ্যাজটেকবাসীরা। চিয়াসিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক ও ক্যাফিক অ্যাসিড নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট। স্বাদের কারণে চিয়া সব ধরনের খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার উপযুক্ত বলে মনে করেন তারা।

এই অঞ্চলের প্রথম চিয়াচাষি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের শাহ্পাড়া গ্রামে কৃষক শাহজাহান মিয়া বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় পরীক্ষামূলকভাবে ২০ শতাংশ জমিতে বাউচিয়ার চাষ করেছি। চাষ পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা। এ ফসলে রোগবালাই ও পরিচর্যা কম লাগায় ২০ শতাংশ জমিতে খরচ হয়েছে তিন হাজার টাকা এবং ফসল উৎপাদন হবে ৪০ থেকে ৫০ কেজি। প্রতি কেজি চিয়া বিক্রি হবে ৬০০ থেকে ১হাজার টাকা। তবে ন্যায্যমূল্য পেলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে এ ফসল চাষ করব।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় জানান, ময়মনসিংহ গ্রিন এ্যালি এগ্রো লিমিটেডের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে ওই কৃষকের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। চিয়া সাধারণত একটি তিল ও রাই সরিষার শস্যদানার মতো। ফসলটি দেশীয় পদ্ধতিতে সারিবদ্ধ কিংবা বীজ ছিটিয়ে চাষাবাদ করা যায়। অক্টোবর মাসে বীজ রোপণ করতে হয়। গম বা সরিষার মতো মাড়াই করে চালুনি, মশারির কাপড়, কুলা দিয়ে সহজে পরিষ্কার করা যায়।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, বাউচিয়া মানে শক্তি, এটি দানাজাতীয় খাদ্য। বাউচিয়ার মধ্যে ১০ প্রকার ঔষধিগুণ বিদ্যমান। যা ক্যান্সার, ডায়াবেটিস প্রতিরোধসহ হার্ড অ্যাটাকের মতো জটিল রোগের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে চিয়া। নতুন এ ফসলের চাষাবাদ ছড়িয়ে পড়লে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। চিয়া চাষাবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের মাঝে কাজ করা হচ্ছে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo