• শিক্ষা

জবিতে ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম বড়ই নাজুক

  • শিক্ষা
  • ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৮:১৬:৫৮

ফাইল ছবি

নিউজ ডেস্কঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ছাত্র সংগঠনগুলোর অবস্থা অনেকটাই নাজুক। করোনার মহামারি শুরুর পর থেকেই স্থবির হয়ে পড়েছে সংগঠনগুলো। এ সময়ে প্রেস রিলিজ আর স্মারকলিপিতেই সীমাবদ্ধ তাদের কার্যক্রম।

করোনার প্রকোপে শিক্ষার্থীদের হল ভাড়া মওকুফ, নিরাপত্তা, ভর্তি ফি মওকুফ, ফাইনাল পরীক্ষা ও ক্যাম্পাস খোলার দাবিসহ ছাত্রদের বিভিন্ন অধিকার আদায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরব থাকলেও ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ছাত্রলীগের একটি অংশ ছাড়া অন্য কারো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।

এ অবস্থায় সংগঠনগুলোর গতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে সংগঠনগুলোর দাবি, করোনায় ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় অধিকাংশ নেতাকর্মী ঢাকায় না থাকা এবং কমিটি গঠন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তাদের কার্যক্রম কিছুটা স্থবির রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বি ফরহাদ বলেন, ‘ছাত্র সংগঠনগুলোর মূল উদ্দেশ্যই হলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া ও অধিকার আদায়ে নেতৃত্ব প্রদান। কিন্তু গত দেড় বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম নেই বললেই চলে। বিভিন্ন ইস্যুতে বারবার শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে দাঁড়ালেও ছাত্রলীগের একটা অংশ ছাড়া অন্য কোনো সংগঠন পাশে ছিল না।’

আবার মেয়াদোর্ত্তীণ কমিটি দিয়েই চলছে অধিকাংশ সংগঠন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ছাত্র অধিকার পরিষদ জবি শাখার সর্বশেষ কমিটি হয়েছে ২০২০ সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে। কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন কমিটি গঠন নিয়ে কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ জবি শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিশু জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের পরীক্ষার কারণে কাজ কম হচ্ছে। কিন্ত বিগত কয়েক মাসে আমাদের প্রচার সম্পাদক রাকিবের নেতৃত্বে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অনেকগুলো কর্মসূচি হয়েছে। সামনে আমাদের নতুন কমিটি গঠন হবে। আশা করি তখন সংগঠনের গতি ফিরবে।’

এছাড়া ক্যাম্পাসে কার্যক্রম নেই বাম সংগঠনগুলোরও।

২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর ২৮তম কাউন্সিলের মাধ্যমে জবি ছাত্র ইউনিয়নের কেএম মুত্তাকীকে সভাপতি ও খায়রুল হাসান জাহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি দেওয়া হয়। একই বছরের মার্চে পঞ্চম সম্মেলনের মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (বাসদ মার্ক্সবাদী) কমিটি গঠিত হয়। সম্মেলনে প্রসেনজিৎ সরকারকে সভাপতি ও অনিমেষ রায়কে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। বর্তমানে জবিতে সংগঠনটির কোনো কমিটি নেই।

এ বিষয়ে কে এম মুত্তাকী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমাদের কার্যক্রম এখন কিছুটা স্থবির। কিন্তু করোনার শুরু থেকে আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে সরব ছিলাম। শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূরক বৃত্তি, সেমিস্টার ফি মওকুফ, সেশনজট নিরসনে সশরীরে পরীক্ষার দাবি জানিয়ে আসছিলাম। আমাদের কিছু সংকট রয়েছে। তবে ক্যাম্পাস খুললে সেটা আর থাকবে না।’

অন্যদিকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (বাসদ মূল অংশ) জবি শাখার পঞ্চম সম্মেলনে মোনায়েম হোসেন মুন্নাকে সভাপতি ও তানজিম সাকিবকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি দেওয়া হয়। এরপর থেকে সশরীরে ক্যাম্পাসে তাদের উল্লেখযোগ্য কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি।

এ বিষয়ে তানজিম সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

এছাড়া জবি ছাত্রলীগের কমিটি নেই গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে। প্রায় আড়াই বছর ধরে নেতৃত্বহীন জবি শাখা ছাত্রলীগ। করোনা মহামারিতে গত দেড় বছরে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় ও বিভিন্ন ইস্যুতে ছাত্রলীগের একটি অংশ পাশে থাকলেও শিক্ষার্থীরা আশানুরূপ ফল পায়নি।

এ বিষয়ে জবি শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল হক টিটন বলেন, ‘করোনার শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবি নিয়ে আমরা কাজ করেছি। শিক্ষার্থীদের বাসা ভাড়া সমস্যা, বৃত্তি প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের মাধ্যমে বাড়ি পাঠানোসহ সব বিষয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলাম। আমাদের কমিটি নেই তাই কিছু সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। কিন্তু আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo