• আন্তর্জাতিক

ধর্ষণের জন্য সম্পূর্ণ দায়ী কেবল ধর্ষক : ইমরান খান

  • আন্তর্জাতিক
  • ২৮ জুলাই, ২০২১ ১৭:৪৪:০৬

ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ধর্ষণ ও নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা বিষয়ে নিজের পুরনো অবস্থান পাল্টেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, কোনো নারী যদি ধর্ষণ বা যৌন সহিংসতার শিকার হন, সেক্ষেত্রে ওই ঘটনার দায় সম্পূর্ণ ধর্ষক বা নিপীড়ক পুরুষের।

ধর্ষণ কিংবা যৌন সহিংসতার শিকার নারীর কোনো দায় এক্ষেত্রে নেই বলে দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেল পিবিএস নিউজ আওয়ারকে মঙ্গলবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা ব্যাপার পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন, আর তা হলো- ধর্ষণ বা নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা বিষয়ক যে কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি ওই অপরাধ করেছে- একমাত্র এবং একমাত্র সেই দায়ী।’

‘নারীর পোষাককে এ জন্য কোনোভাবেই দায়ী করা যাবে না। ধর্ষণ বা যে কোনো প্রকার যৌন সহিংসতার জন্য দায়ী কিংবা অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হবে ধর্ষক। ধর্ষণ-সহিংসতার শিকার নারী কোনোভাবেই এজন্য দায়ী নন।’

গত এপ্রিলে পাকিস্তানের জনগণের সঙ্গে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়ে ইমরান খান বলেছিলেন, নারীদের অশ্লীল পোশাকের কারণেই পাকিস্তানে যৌন সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে— বিশেষ করে শিশুদের বিরুদ্ধে।

এই মন্তব্যের জেরে দেশজুড়ে শুরু হওয়া সমালোচনার মধ্যেই গত জুন মাসে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবারও এক বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।

অ্যাক্সিওসের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘একজন নারী যদি খুবই স্বল্প বসন পরেন, তাহলে এটি পুরুষদের ওপর প্রভাব ফেলবে; যদি তারা রোবট না হন। এটি সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানের ব্যাপার।’

তবে মঙ্গলবারের সাক্ষাতকারে পিবিএস নিউজ আওয়ারকে ইমরান খান অভিযোগ করেন, তার মন্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এ সম্পর্কে পিবিএসকে নিউজ আওয়ারকে তিনি বলেন, ‘ধর্ষণে শিকার নারীদের এ ঘটনার জন্য দায় রয়েছে- এটি খুবই ভ্রান্ত ও নির্বোধ একটি ধারণা। এমন ধারণা প্রকাশ করা তো দূর-চিন্তা করাও আমার পক্ষে কঠিন।’

‘তারা (অ্যাক্সিওস) আমাকে প্রশ্ন করেছিল- পাকিস্তানের সমাজ ব্যবস্থা ও নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বিষয়ে। তখন কথা প্রসঙ্গে আমি সেসব কথা বলেছিলাম।’

‘কিন্তু পরে যেভাবে এটি সামনে এলো- তাতে আমি হতবাক হয়ে গেছি। আমি অবাক হয়েছি এই ভেবে যে কিভাবে এমন একটি নির্বোধ মন্তব্য আমার নামে প্রকাশিত হলো!’

পাকিস্তানে সম্প্রতি ব্যাপক হারে বাড়ছে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে পাকিস্তানের পুলিশ স্টেশনসমূহে প্রতিদিন গড়ে ১১ টি ধর্ষণের অভিযোগ আসছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, গত ছয় বছরে পাকিস্তান পুলিশের কাছে আসা ধর্ষণের অভিযোগ মোট সংখ্যা ২২ হাজারেরও বেশি।

দেশটির সমাজ ব্যবস্থায় ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব ‍বৃদ্ধির কারণে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা বাড়ছে কি না জানতে চাইলে পিবিএস নিউজ আওয়ারকে ইমরান খান বলেন, ‘একদমই না। ইসলাম সবসময় নারীর মর্যাদা ও সম্মানে বিশ্বাসী।’

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo