• বিশেষ প্রতিবেদন

দূরপাল্লার বাস নেই, তবুও মহাসড়কে যানজট-ভোগান্তি 

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ২৪ জুন, ২০২১ ১৭:৫৮:১৬

ছবিঃ সিএনআই

নুরুল আমিন হাসান : করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে রাজধানীর আশে পাশের সাত জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। যার ফলে রাজধানী থেকে কোন ধরণের অন্তঃজেলা বাস প্রবেশ কিংবা বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। যার কারণে দূর পাল্লার বাস মহাসড়কে নেই।

তবুও সড়কে রয়েছে তীব্র যানজট। শুধু মহাড়কেই নয়, যানজট ছড়িয়ে পড়েছে আশে পাশের সেক্টরগুলোতেও। যার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন জনগণ ও যাত্রীরা।  

সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকা টু ময়মনসিংহ মহাড়কের উত্তরার জসিমউদ্দিন থেকে রাজধানীর বাহিরপথ আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত এ যানজট দেখা যায়। এছাড়াও এ যানজটের বিস্তার লাভ উত্তরার ৩, ৫, ৭, ৯, ১১ ও ১০ নম্বর সেক্টরের বিভিন্ন সড়কের অলিগলিতেও ছড়িয়ে পড়ে। যার কারণে সামান্য একটু পথ পাড়ি দিতে বহু সময় লেগে যাচ্ছে।   

এদিকে রাজধানীর অন্যতম প্রবেশ ও বাহির পথ দিয়ে যাত্রীবাহী বাস যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে না। যেসব বাস রাজধানীতে প্রবেশের উদ্দেশ্যে আসছে, তাদেরকে টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকা থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে আন্তঃজেলা বাস ব্যতিত শুধুমাত্র লোকালবাসগুলোকে ঢাকা থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য আগত বাসগুলোকে আব্দুল্লাহপুর থেকেই ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

গণপরিহণ ঢাকায় প্রবেশ করতে না দেওয়ার কারণে বিড়ম্বনায় পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তারা যে যেভাবে পারছেন অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলের উদ্দেশ্য রওয়া হচ্ছেন। অফিস-আদালত, ব্যবসায়ী ও অন্যান্য পেশার কর্মজীবীদের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা-ই রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি। যদিও এসব পরিহণে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের  অভিযোগ যাত্রীদের। যাত্রীরা বলছেন- ‘পূর্বের তুলনায় গাড়ি না থাকার সুযোগ বুঝে দ্বিগুণ তিনগুন ভাড়া আদায় করছেন চালকরা। আগে যেখানে রিকশা দিয়ে গেলে ভাড়া দেওয়া লাগতো ১০ টাকা, বর্তমানে সেখানে গেলে দিতে হয় ৩০ টাকা।’   

কর্মের তাগিদে জামালপুর থেকে রাজধানীতে ফিরেছেন মামুন। তিনি বলেন, বাড়িতে বাবা অসুস্থ ছিল। তাই আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে জামালপুরে গিয়েছিল। ছুটি শেষে ফেরার পথে লকডাউনের কারণে নানান সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তিনশত টাকার ভাড়া ভেঙ্গে ভেঙ্গে ছয় শত টাকার বেশি খরচ হয়েছে। তবুও আবার যেখানে পুলিম বাধা দিয়েছে, সেখানে গাড়ি থেকে নেমে হাটতে হয়েছে। পুনঃরায় নতুন গাড়িতে উঠতে হয়েছে।

এদিকে গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় বেশি বিড়ম্ভনায় পড়েছেন, নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ। কর্মজীবি নারী মুন্নি আক্তার বলেন, লকডাউনে বাস বন্ধ, কিন্তু অফিস তো বন্ধ না। অফিসে না গেলে বেতন দিব না। আর বেতন না দিলে খাবো কি, বাড়ি ভাড়া দিব কি করে? তাছাড়া দেশের বাড়িতে মা-বাবা’কে কি করে টাকা পাঠাবো? তারা তো না খেয়ে মরবেন। তাই বাধ্য হয়েই কখনো পায়ে হেটে, আবার কখনো কখনো রিকশা, ভ্যান, সিএনজিতে করে অফিসে যাওয়া হচ্ছে।

এসব বিষয়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ ও থানার পুলিশ সদস্যরা বলেন- গাজীপুর লকডাউন হওয়ার কারণে কোন বাস ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার দূরপাল্লার কোন বাস ঢাকা থেকে বাহির হতে দেওয়া হচ্ছে না। সব বাস আব্দুল্লাহপুর থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

উত্তরা জোনের ট্রাফিক পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) রফিকুল ইসলাম বলেন- ‘করোনা মহামারী বেড়ে যাওয়ায় তা রোধে রাজধানীর আশে পাশের সাত জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জরুরী প্রয়োজনে চলাচলরত যাত্রীদের কিছুটা দুর্ভোগ হচ্ছে।’

 

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo