• অর্থনীতি

ভাল দাম ও সরকারী সহায়তা পাওয়ায় চাটমোহরে পাট চাষের পরিধি বেড়েছে

  • অর্থনীতি
  • ২৩ জুন, ২০২১ ১৩:৪৮:২১

ছবিঃ সংগৃহীত

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : গত দুই বছর যাবত পাটের ভাল দাম পাওয়ায় এবং পাট চাষ সম্প্রসারণে কৃষককে সরকার সহায়তা করায় চাটমোহরে পাট চাষের পরিধি বেড়েছে। গত মৌসুমে চাটমোহরের ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় ৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের পাট চাষ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে ৮৭২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দেশী ১৩৫ হেক্টর, তোষা ৮ হাজার ৪৪৫ হেক্টর এবং মেস্তা ১৪০ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে এ বছর ৬শ ২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ বেশি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস পাট চাষের সার্বিক বিষয় দেখা শুনা করলেও পাট অধিদপ্তরের জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা ও উপজেলা উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তারা পাট চাষ সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছেন। চাটমোহরে কর্মরত উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়া জানান, পাট অধিদপ্তরের অধীনে চাটমোহরে তালিকাভূক্ত পাট চাষীর সংখ্যা ৫০০ জন। পাট অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২০২০-২১ অর্থ বছরে চাটমোহরের ২৪৮৫ জন কৃষকের মাঝে রবি-১ জাতের ২৪০০ কেজি পাট বীজ ও চাষি পর্যায়ে উৎপাদিত ৯৮৯৭ জাতের ৮৫ কেজি পাটবীজ সর্বমোট ২৪৮৫ কেজি পাট বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। পাট বীজ প্রাপ্ত কৃষকদের ৬ কেজি করে ইউরিয়া ৩ কেজি করে টিএসপি ও ৩ কেজি করে পটাশ সারও বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।

গত বছরের শেষ দিকে বীজ উৎপাদন মৌসুমে ৩৩০ জন চাষীকে ১০ শতক করে জায়গায় বীজ উৎপাদনের জন্য বিনামূল্যে সার বীজ ও কীটনাশক বিতরণ করা হয়েছিল। হরিপুর, ডিবিগ্রাম,পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নে বীজ উৎপাদন করা হয়। পাট চাষে দক্ষতা বাড়াতে খুব শীঘ্রই ১০০ জন পাট চাষীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তালিকাভুক্ত চাষীদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের নাম কর্তন করে নতুন নাম সংযোজনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

পাট চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান পাট চাষীরা পাট খেতে আগাছা পরিষ্কারের কাজ করছেন। চাষ, বীজ, সার, দুই দফা আগাছা পরিষ্কার, কাটা, পঁচানো, আশ ছড়ানোসহ এক বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। গড় ফলন পাওয়া যায় প্রায় ৮ মন। বিঘা প্রতি প্রায় ২ হাজার টাকার পাটকাঠিও পাওয়া যায়। গত বছর ভর মৌসুমে প্রতি মন পাট ২ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও ক্রমশই পাটের দাম বাড়তে থাকে। যারা ভর মৌসুমে পাট বিক্রি করে দিয়েছিলেন তারা বিঘা প্রতি ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা লাভ পেয়েছিলেন। আর যারা বেশ পরে বিক্রি করেন তারা বিঘা প্রতি প্রায় ২০ হাজার টাকা লাভ পেয়েছেন। জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাট জাত দ্রব্যের বিকল্প নেই।

সরকার পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি ও পাটজাত দ্রব্য তৈরীতে বিশেষ নজর দিয়েছে। চাষীরা পাটের উপযুক্ত মুল্য ও পাচ্ছে। এমতাবস্থায় চাটমোহরে স্থানীয় ভাবে পাট বীজ উৎপাদন করা হচ্ছে। পাট অধিদপ্তর কৃষকের নিকট থেকে কিছু দিন পূর্বে ২০০ টাকা কেজি দরে ৮৫ কেজি পাট বীজ ক্রয় করে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করেছে। বর্তমানে প্রায়শই বৃষ্টি হচ্ছে, গরম পরছে। এমন আবহাওয়ায় পাট ভাল বাড়ে। কৃষকদের পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে এবং পাটের বাজার মূল্য ভাল থাকলে আবার পাটের সুদিন ফিরবে, চাষীরা উপকৃত হবে। বিশ্বে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার আরো বাড়লে সোনালী আঁশ খ্যাত পাট শিল্পের আরো প্রসার ঘটবে।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo