• জাতীয়
  • লিড নিউজ

ঈদযাত্রায় দেশের সড়কে ঝরেছে ২৮৩ প্রাণ

  • জাতীয়
  • লিড নিউজ
  • ২২ মে, ২০২১ ১৭:১৬:০০

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্কঃ ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদযাত্রায় দেশের সড়ক ও মহাসড়কে ২২৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ২৮৩ জন, আহত হয়েছেন ৩১৯ জন। অন্যদিকে নৌপথে বাংলাবাজার ফেরি ঘাটে ফেরিতে হুড়াহুড়িতে পদদলিত হয়ে ৫ জন নিহত ও শতাধিক অসুস্থ হয়েছে।

শনিবার (২২ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

সংগঠনটির দুর্ঘটনা প্রতিবেদন বলছে, গতবছরের ঈদযাত্রার তুলনায় এবারের ঈদুল ফিতরের যাত্রায় নিহত বেড়েছে ৭৪ শতাংশ। ২০২০ সালের ঈদুল ফিতরে ১৪৩ সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬২ জন নিহত ও ২৭১ জন আহত হয়েছিলেন।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. সামসুদ্দীন চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গতবছরের মতো এবছরও প্রথম রমজান থেকে ‘কঠোর লকডাউনে’ ছিল সারাদেশে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পণ্যপরিবহনে ব্যবহৃত যান ও ব্যক্তিগত পরিবহনে ঈদযাত্রা করলেও ঈদের আগে ও পরে সড়ক দুর্ঘটনা ছিল আগের তুলনায় বেশি।

যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্রতিবেদন বলছে, গত ৮ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত ১৩ দিনে ২২৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৮৩ জন নিহত ও ৩১৯ জন আহত হয়েছেন। এ সময়ে রেলপথে ট্রেনে কাটা পড়ে একজন নিহত হয়। একই সময়ে নৌপথে বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনায় ছয় জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সংগঠনটির দুর্ঘটনা গবেষণা ও মনিটরিং সেলের সদস্যরা ১৩টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি আঞ্চলিক দৈনিক ও ১০টি অনলাইন নিউজপোর্টালে প্রকাশিত সংবাদের তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৮ মে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত ও ১৯ জন আহত, ৯ মে ১৪টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও ১৬ জন আহত, ১০ মে ১৬টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও ১৭ জন আহত, ১১ মে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও ২৬ জন আহত হয়। ১২ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত ৮০টি দুর্ঘটনায় ১০৮ জন নিহত ও ১৬৬ জন আহত হয়। ১৭ মে ২০টি দুর্ঘটনায় ২৭ নিহত ও ২৩ জন আহত, ১৮ মে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও ১০ জন আহত, ১৯ মে ২৩টি দুর্ঘটনায় ৩৪ নিহত ও ১২ জন আহত, ২০ মে ১৭টি দুর্ঘটনায় ২২ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়। সর্বমোট ২২৪টি দুর্ঘটনায় নিহত হয় ২৮৩ জন আর আহত ৩১৯ জন।

যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তথ্যমতে, ২০১৯ সালের ঈদুল ফিতরের ঈদযাত্রায় ১৮৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২২১ জন নিহত ও ৬৫২ জন আহত হয়েছিল। এছাড়া ২০২০ সালের ঈদুল ফিতরে ১৪৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬২ জন নিহত ও ২৭১ জন আহত হয়েছে। গতবছরের চেয়ে এবারের ঈদযাত্রায় নিহত ৭৪ শতাংশ সংখ্যা বেড়েছে।

এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের ডা. জহিরুল হক ও ডা. তুহিন, গাজীপুরে র‌্যাব-৪ এর সার্জেন্ট খায়রুল ইসলাম, সাভারে মিরপুর কম্বাইন্ড স্কুলের শিক্ষক মিরা আরফিন, লালমনিরহাট জেলা মোটর মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ এবং আরজি পরিবহনের মালিক অনুপ কুমার বাপ্পী, পটুয়াখালীতে সাবিনা আক্তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সেলিনা আক্তার, সিলেট ব্রাক্ষণগ্রাম হযরত শাহজালাল (র:) ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আমিরুল ইসলাম প্রমুখ মারা যান।

এছাড়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম, কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শামীম হোসেন ও তার স্ত্রী-পুত্র দুর্ঘটনায় আহত হয়।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ১৯টি বাস-মিনিবাস; ৬৭টি ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ; ৩৪টি কার-মাইক্রো; ৪৫টি নছিমন-করিমন, ভটভটি-ইজিবাইক, অটোরিকশা; ৯৩টি মোটরসাইকেল; ১৭টি অন্য যানবাহন এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬৩টি গাড়িচাপায়, ৮০টি সংঘর্ষ, ১৬টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ও অন্যান্য কারণে ৬৫টি দুর্ঘটনা ঘটে।

যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে-

১. লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ছোট যানবাহনে যাত্রীর চাপ

২. ফাঁকা রাস্তায় চালকদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ও অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো

৩. অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

৪. অদক্ষ চালকের হাতে দৈনিক চুক্তিতে যানবাহন ভাড়া দেওয়া

৫. ফিটনেসবিহীন যানবাহনে যাত্রী বহন

৬. মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন-করিমনের অবাধে চলাচল

৭. বিপজ্জনক ওভারটেকিং

৮. পণ্যপরিবহনের যানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রী বহন

৯. যাত্রীদের ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অভাব এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী

১০. টিনএজারদের বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo