• বিশেষ প্রতিবেদন

কালের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী প্রতাপপুর জমিদার বাড়ী

  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • ১৭ এপ্রিল, ২০২১ ১৫:৩১:৪১

ছবিঃ সিএনআই

ফেনী প্রতিনিধিঃ কালের সাক্ষী ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর মডেল ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি। স্থানীয়দের কাছে এটি প্রতাপপুর বড় বাড়ি নামেই বেশী পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী এই জমিদার বাড়িটি ১৮৫০ কিংবা ১৮৬০ সালে নির্মিত হয়।

তবে আরেকটি তথ্যমতে, বাংলা ১২২৮ সালের ১৩ ফাল্গুন শেষ হয় ওই ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামের এই জমিদার বাড়ির নির্মাণকাজ। এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজকৃষ্ণ সাহা কিংবা রামনাথ কৃষ্ণ সাহা। প্রায় ১৩ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হয় জমিদার বাড়িটি।

বাড়িটিতে রয়েছে ১০টি ভবন ও ১৩টি পুকুর। এরমধ্যে ৫টি পুকুরে রয়েছে বাঁধানো সুন্দর ঘাট। প্রবেশদ্বারে ঢুকতেই স্বাগতম জানায় বিশালাকৃতির এক চালতা গাছ। এতো বৃহৎ আকৃতির চালতা গাছ হয়তো প্রথমবার দেখবেন আপনি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রায়হান ও এলাকাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দাগনভূঞায় কয়েকটি চৌধুরী, ভূঞা এবং জমিদার বংশের মধ্যে প্রতাপপুর জমিদারদের অবস্থান ছিল শীর্ষে। তারা ছিল আশপাশের এলাকার জন্য প্রভাবশালী জমিদার। ব্রিটিশ আমলে বাড়ির জমিদার রাজকৃঞ্চ সাহা এ বাড়িতে বসেই এলাকার শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। জমির খাজনাদি আদায় করতেন তিনি এবং তার ৫ ছেলে।

বাড়ির ভেতরে যে পাঁচটি পুকুরের পাকা ঘাট রয়েছে, সেই ৫টি ঘাটে কাজ করতেন জমিদার বাড়ির নারীরা। তৎকালীন অন্যান্য স্থানের জমিদাররা এ বাড়িতে সফর বিরতি করতেন। একপর্যায় জমিদার প্রথার বিলুপ্তি ঘটলে তাদের প্রভার প্রতিপত্তি কমতে শুরু করে।

জানা যায়, এই এলাকার আশেপাশের শীর্ষ জমিদার ছিলেন রামনাথ কৃষ্ণ সাহা। তারা ছিলেন পাঁচ ভাই। থাকতেন পাঁচটি দ্বিতল ভবনে। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পরও ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এদের বংশধররা এই জমিদার বাড়িতেই ছিলেন ।

পরে নিরাপত্তার অভাব, ব্যবসায়িক ও যোগাযোগ সমস্যার কারণে ১৯৯৮ সালের দিকে বাড়িটি ছেড়ে দিয়ে রামনাথ কৃষ্ণ সাহার বংশধররা ঢাকা, চট্টগ্রাম, কলকাতা ও ত্রিপুরায় পাড়ি জমান। তবে, বাড়িটি এখনো জমিদারের বংশধরদের মালিকানাধীন রয়েছে। স্থানীয়রা একে বড় বাড়ি, রাজবাড়ি, সাহু বাড়ি নামেও ডাকেন। এখনো প্রতি বছর বৈশাখে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এ বাড়িকে ঘিরে তিন দিনব্যাপী উৎসব পালন করেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo