• রাজনীতি

কোন প্রেক্ষাপটে বিএনপি থেকে ৫ বার বহিষ্কার হয়েছিলেন মেজর আখতার

  • রাজনীতি

ছবিঃ সংগৃহীত

নিউজ ডেস্ক : বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কৃত কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামানের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে। কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে টানা দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তখন আসনটি কেবল কটিয়াদী উপজেলা নিয়েই ছিল। এখন এ আসনে যুক্ত করা হয়েছে পাকুন্দিয়া উপজেলাকেও।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পুলিশের সাবেক আইজি নৌকার নূর মোহাম্মদের কাছে হেরে যান আখতারুজ্জামান।

এক সময় তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপিরও সভাপতি ছিলেন। দলীয় শৃঙ্খলা-পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আখতারুজ্জামান পঞ্চমবারের মতো বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। তবে নানা সময় সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে টক শো কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা বলে তিনি আলোচনায় ছিলেন। এমন অবস্থার মধ্যেই তিনি জামায়াতে যোগ দিলেন।

যোগ দিয়েই তিনি বলেছেন, জামায়াত ‘দেশপ্রেমিক’ একটি দল। শনিবার সকালে মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এক সময় জামায়াতের কড়া সমালোচক এই মুক্তিযোদ্ধা এদিন প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করে জামায়াতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন। জামায়াতে যোগ দেওয়ার কারণও জানিয়েছেন তিনি।

আখতারুজ্জামান বলেন, বিএনপির কথার ঠিক নেই। উনি (তারেক রহমান) বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে’। কথাটা সঠিক নয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে, জামায়াতের বিরুদ্ধে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি। আপনি একের পর এক মিথ্যা বলে যাবেন। এর প্রতিবাদে আমি জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছি। কারণ জামায়াত তো দেশদ্রোহী কোনো দল নয়; জামায়াতে ইসলামী একটি দেশপ্রেমিক দল। জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করে এবং তাদের যে গঠনতন্ত্র আছে, সেখানেও এটা স্পষ্টভাবে লেখা আছে।

বিএনপি নীতিনির্ধারকদের সমালোচনা করে আখতারুজ্জামান বলেন, ১৯৯১ সালে জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গী না করার জন্য আমি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা ওই সময়ে আমার কথা শোনেননি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাট্টা হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তারা আবার জোটবদ্ধ হয়েছিল এবং সরকারও গঠন করেছিল।

‘গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের রোষানলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে জামায়াত। তাদের নেতাদের ফাঁসিতেও ঝুলিয়েছেন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বিএনপি যেমন নির্যাতিত হয়েছে, নিপীড়ন ভোগ করেছে, মাইর খাইছে, মামলা-মোকদ্দমা খাইছে; অনুরূপভাবে জামায়াতেও খাইছে, নির্যাতিত, নিষ্পেষিত হয়েছে।

আখতারুজ্জামান বলেন, ৫ অগাস্টের পরে এখন যেখানে ফ্যাসিস্ট বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে চলার কথা, ঐক্যের রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা; সেখানে দেখা গেল—বিভক্তির রাজনীতির সূচনা করল বিএনপি।

বিএনপি থেকে সদ্যই জামায়াতে যোগ দেওয়া এই নেতা বলেন, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের কথা বলছে, ভালো কথা। আমিও তো মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু আমরা তো একাত্তর সালে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি, জামায়াতের সঙ্গে তো নয়। তা হলে এখন এসব নিয়ে কেন ঝগড়াঝাঁটি। আমার প্রশ্ন, আপনি (বিএনপি) কাদের স্বার্থে এখন জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলছেন?

আখতারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপির নেতারা এতো পাগল হয়ে যান কেন, আমি তা বুঝতে পারি না।

সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান ১৯৭১ সালে তিন নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর কে এম শফিউল্লাহর অধীনে যুদ্ধ করেন।

 

মন্তব্য (০)





  • company_logo