লাইফস্টাইল ডেস্ক: স্ট্রবেরি শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিগুণ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। ২০১৯ সালে নিউট্রিয়েন্টস জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়, তাজা ও হিমায়িত—দু’ধরনেই স্ট্রবেরি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ইটিং ওয়েল—এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে স্ট্রবেরির উপকারিতা, প্রতিদিন খেলে শরীরে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে এবং সম্ভাব্য কিছু ঝুঁকি তুলে ধরা হয়েছে।
প্রদাহ কমাতে সহায়ক
স্ট্রবেরিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন–সি, যা প্রাকৃতিকভাবে প্রদাহ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। ২০২১ সালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, স্ট্রবেরির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহজনিত রোগ—যেমন হৃদ্রোগ ও ডায়াবেটিস—প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। পুষ্টিবিদ ব্রিটানি লুবেক জানান, স্ট্রবেরিতে ভিটামিন–সি, ফ্ল্যাভোনয়েড ও ফেনোলিক অ্যাসিডসহ উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরে মোট অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে।
হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে
স্ট্রবেরিতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিনসহ বিভিন্ন হৃদ্স্বাস্থ্যবান্ধব উপাদান রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। ড. লুবেক জানান, গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যে নিয়মিত স্ট্রবেরি খাওয়া রক্তের লিপিড ও সিস্টোলিক প্রেসার কমাতে সহায়তা করতে পারে, যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
২০২২ সালে সায়েন্টিফিক রিপোর্টস–এ প্রকাশিত এক পর্যালোচনায় বলা হয়, স্ট্রবেরিতে থাকা পলিফেনলস মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষা দেয়, বয়স বাড়ার সাথে সাথে জ্ঞানীয় ক্ষমতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং মানসিক সতর্কতা বাড়ায়।
হজমশক্তি উন্নত করে
স্ট্রবেরিতে থাকা উচ্চমাত্রার খাদ্যআঁশ হজম প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এই তথ্য ২০২০ সালে নিউট্রিয়েন্টস—এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।
রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, স্ট্রবেরি ইনসুলিন প্রতিক্রিয়া কমাতে এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স উন্নত করতে পারে। এর আঁশ শর্করার শোষণ ধীর করে, ফলে রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত বেড়ে যায় না। ড. লুবেক জানান, স্ট্রবেরির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, তাই এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বাড়ায় না।
‘স্ট্রবেরিতে অ্যালার্জি বিরল’
স্ট্রবেরি সাধারণত বেশিরভাগ মানুষের জন্যই নিরাপদ। তবে অনুরূপ ফলের প্রতি সংবেদনশীল কেউ কেউ মাঝে মাঝে হালকা প্রতিক্রিয়া অনুভব করতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব প্রতিক্রিয়া সাধারণত অ্যালার্জির চেয়ে খাদ্য অসহিষ্ণুতার মতো আচরণ করে।
সালিসাইলেট–সংবেদনশীল ব্যক্তিরা মাথাব্যথা বা হজমজনিত অস্বস্তির মতো সমস্যা অনুভব করতে পারেন, কারণ স্ট্রবেরিতে প্রাকৃতিকভাবে সালিসাইলেট থাকে। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ড. লুবেক বলেন, স্ট্রবেরিতে অ্যালার্জি সম্ভব হলেও খুবই বিরল। উপসর্গের মধ্যে মাথাব্যথা, র্যাশ, পেটের সমস্যা, হাঁপানি এবং খুব বিরল ক্ষেত্রে অ্যানাফাইল্যাক্সিস দেখা দিতে পারে।
মন্তব্য (০)