নিউজ ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। পরিচালনা পরিষদের সভা শেষে জোটটি জানায়—এই রায় প্রমাণ করেছে, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বিচারিক প্রক্রিয়া যেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনও ক্ষেত্রেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে আহ্বানও জানিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিকাল ৫টায় রাজধানীর তোপখানা রোডে বাসদ কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, গত বছরের জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের দাবি বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের। যে কোনো হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী অপরাধীদের বিচার প্রতিটি গণতন্ত্রকামী মানুষের কাম্য। ফলে জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারে শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ববরণকারী পরিবার যেমন কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে আমরাও দেশবাসীর অংশ হিসেবে স্বচ্ছ সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভিক্টিম পরিবার এবং অভিযুক্ত উভয়েই যাতে ন্যায় বিচার পায় সে দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি। ফলে বিচারের রায়ে প্রমাণ হয়েছে- কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
প্রস্তাবে বলা হয়, আমরা শুধু আশা করব- বিচারিক প্রক্রিয়া যেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো ক্ষেত্রে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় এবং আপিল ও রিভিউসহ বিচারের সকল ধাপ যেন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করা হয়।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, আদেশ দাতাদেরকে যেখানে সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির অভিযোগে ক্যাপিটাল পানিসমেন্ট দেওয়া হয়েছে সেখানে আদেশ পালনকারী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর প্রধান আইজিপিকে রাজসাক্ষী বানিয়ে মাত্র ৫ বছরের সাজা দেওয়া শহীদ পরিবার যেমন মেনে নেয়নি তেমনি বাম জোটের পক্ষ থেকে আমরাও এটাকে গ্রহণ করতে পারিনি।
তাছাড়া জুলাই হত্যাকাণ্ডের এত এভিডেন্স ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও ডিভাইসে রয়েছে এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টেও বলা হয়েছে- তাদের কাছেও বহু এভিডেন্স রয়েছে, সরকার চাইলে তারা দেবে। ফলে এই মামলায় রাজসাক্ষীর কোনো প্রয়োজন ছিল না।
প্রস্তাবে সাবেক আইজিপির বিচারের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিল করার আহ্বান জানানো হয়। না হলে পুলিশ-আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ভবিষ্যতে আরও বেপরোয়া হয়ে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করে রাজসাক্ষী হয়ে পার পেয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে।
প্রস্তাবে জুলাই-আগস্টের সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত এবং সকল দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানানো হয় যাতে ভবিষ্যতে কেউ ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠতে গেলে অন্তত একবার হলেও চিন্তা করে।
এদিন সভায় সভাপতিত্ব করেন জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। উপস্থিত ছিলেন সিপিবি’র সভাপতি কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী)-র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য নিখিল দাস এবং গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ।
মন্তব্য (০)