
নিউজ ডেস্কঃ জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমরা বর্বরতার সমাজে ছিলাম। সেখান থেকে আমরা সভ্যযুগে প্রবেশ করলাম। আমাদের ভবিষ্যত অত্যন্ত চমৎকার। শুধু আমাদের সমাজকে গঠন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে এই দিনটি যে পেলাম, এটা মহান দিন। এটার কথা চিন্তা করলে গা শিউরে ওঠে। এমন একটি দিন সেটা শুধু জাতির জন্য না, সারা পৃথিবীর জন্য একটা বড় রকমের উদাহরণ হয়ে থাকবে। বহু জায়গায় যেটা পাঠ্যপুস্তকে থাকবে, সেটার ক্লাসরুমে আলোচনা হবে। রাজনৈতিকদের মধ্যে এটা নিয়ে আলোচনা হবে বিভিন্ন দেশে। কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক, তারা কী বলল, আমরা কী চাই। তারা সেটা পারে কি না, সেটা চেষ্টা করে দেখবে তাদের দেশে এটা সম্ভব কি না। যেই উদাহরণ আমাদের দেশের রাজনৈতিকরা সৃষ্টি করেছেন, সেটা দেশের জন্য তো বটেই, সারা পৃথিবীর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ঐকমত্য কমিশন গঠনের পর মনে মনে আশা ছিল যে, হয়তো দুই একটা বিষয়ে দলগুলোকে একমত করতে পারব। রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শুনলে মনে হয় কেউ কারও কথা শুনবে না। কাজেই ভয়ে ভয়ে এটা শুরু হয়েছিল। প্রফেসর আলী রীয়াজকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। উনি একজন গুণীজন। যে উনি বুঝে বুঝে যদি অগ্রসর হতে পারেন। অবাক কান্ড! সারাদেশ দেখলো সব রাজনৈতিক দল শুধু আলাপে বসল না, চমৎকার আলাপ করল। এত গভীরভাবে, এত গভীর জ্ঞানের সঙ্গে তাদের মধ্যে আলোচনা হলো, এত সৌহার্দ্যের সঙ্গে আলোচনা হলো—এটা না দেখলে আমাদের বিশ্বাস হতো না।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজ যে ঐক্যের সুর এখানে বাজিয়েছি সেই ঐক্যের সুর দিয়ে আমরা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে যাবো। নির্বাচন কীভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে করা যাবে, তার জন্য আবার আপনারা বসুন, আলোচনা করুন। যত সুন্দরভাবে করা যায়, তত সুন্দরভাবে করার আয়োজন করেন।
গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের কথা স্মরণ করে ড. ইউনূস বলেন, এই কমিশন ও সনদ করার সুযোগ যারা দিয়েছে আজ তাদের স্মরণ করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের কথা মনে রাখতে হবে। যারা জীবন দিয়েছেন, আহত হয়ে বেঁচে আছেন তাদের কাছে জাতি চির কৃতজ্ঞ।
অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্যে বৃহৎ জনগোষ্ঠী হিসেবে তরুণদের সম্ভাবনা, সমুদ্র বন্দরের উপযুক্ত ব্যবহারের প্রসঙ্গও উঠে আসে।
তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের অংশ। একটি নিয়মের মধ্যে চললে এই সম্পদের ব্যবহার করতে পারবো। যদি গভীর সমুদ্র বন্দর করে দেই তাহলে দুনিয়ার অনেক জাহাজ আমাদের বন্দরে ভিড়তে পারবে। আমাদের জাহাজ সিঙ্গাপুরে আটকে থাকবে না। এটি একটি বিরাট সুযোগ।
ড. ইউনূস আরও বলেন, অন্য দেশের জেলেরা এসে বঙ্গোপসাগরের মাছ নিয়ে যায়। আমরা হা করে তাকিয়ে থাকি। কক্সবাজার, মাতারবাড়ি ও মহেশখালী মিলিয়ে যদি একযোগে বন্দর উন্নত করি, তাহলে পুরো এলাকা নতুন সিঙ্গাপুরে পরিণত হবে। সব দেশের মানুষ এখানে আসবে। আমরা নেপাল, ভুটান ও সেভেন-সিস্টার্সের সঙ্গে আত্মিক যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারবো এসব বন্দরের কারণে।
মন্তব্য (০)