
নিউজ ডেস্ক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রশাসনের মধ্যে ফ্যাসিবাদী শক্তি নানাভাবেই ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা সুযোগ পেলেই অন্তর্বর্তী সরকার এবং গণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জিয়া পরিষদের উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে রিকশা ও ভ্যানচালদের রেইনকোট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘আজকে নানাভাবেই আমাদের সমাজের একেবারে গভীরে ফ্যাসিবাদ অবস্থান করছে অবৈধ টাকা নিয়ে, অবৈধ অস্ত্র নিয়ে। সামনে নির্বাচন, এ নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকার যদি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারে তাহলে এ নির্বাচন একটি বিপজ্জনক নির্বাচন হবে। তাই অবিলম্বে নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।
ফ্যাসিবাদী শক্তি নানাভাবেই ঘাপটি মেরে বসে আছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘এই প্রশাসনের মধ্যে ফ্যাসিবাদী শক্তি নানাভাবেই ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা সুযোগ পেলেই অন্তর্বর্তী সরকার এবং গণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে। যারা রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করেন তারা প্রত্যেকেই দেখছেন, আজকে সচিবালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় তারা তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে সেখানে বসে আছেন এবং বিভ্রান্তি তৈরি করার জন্য তারা কাজ করছেন।
মানুষ বেকার থাকলে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাবে মন্তব্য করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘একের পর এক কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যদি মানুষের কর্মসংস্থান না থাকে তাহলে দুর্ভিক্ষের আলামত তৈরি হবে। আপনাদের দুএকজন উপদেষ্টা হয়তো হাঁসের মাংস খেতে পারবেন যে কোনো জায়গায়। কিন্তু জনগণ তো আর হাঁসের মাংস খেতে পারবে না। সেই আলামত সেই পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে অন্তর্বর্তী সরকারকে নজর দিতে হবে। গার্মেন্টস সেক্টর থেকে এক লক্ষ লোকের চাকরি চলে গেছে। কারণ অনেক ফ্যাসিবাদের দোসর মিলকারখানার মালিক। আমাদের দল থেকে বারবার বলা হয়েছে, মিল কারখানা যেন বন্ধ না হয়। প্রয়োজনে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।
জুলাই সনদের ব্যাপারে আইন সংশোধন সংবিধান সংশোধন করতে হলে নির্বাচিত সরকার করবে- এমন অভিমত জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আপনারা জুলাই সনদের বিষয়ে কথা বলছেন, জুলাই সনদে যে সুপারিশ আসবে সেখানে যদি আইন সংশোধন করতে হয় সংবিধান সংশোধন করতে হয় সেটা তো নির্বাচিত পার্লামেন্ট করবে। একটি রাজনৈতিক দল বলছে যে আগেই গণভোট দিতে হবে, কিন্তু কেন? যদি মূল নীতিমালায় কোনো পরিবর্তন করতে হয়, মূলনীতিমালা একটা অখন্ড বিষয়, তারপরেও সংবিধানের বিধান অনুযায়ী সংশোধন করা যায়। কিন্তু সেটা তো করবে পার্লামেন্ট। শেখ হাসিনা যেমন গায়ের জোরে চালিয়েছেন, যেমন- প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আমার মতের মিল হয়নি অতএব গোয়েন্দা সংস্থার লোকদেরকে পাঠিয়ে দিয়ে পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে। ওই ধরনের আলামত বৈশিষ্ট্য এখন কেন থাকবে? শেখ হাসিনা যে নিয়ম ভেঙেছেন, সেই নিয়মকে তো আমরা চালু করতে পারি না। আগে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার তৈরি করুন। তারা রাষ্ট্রের স্বার্থে গণতন্ত্রের স্বার্থে সংবিধান যদি সংশোধন করতে হয় তারা করবে সেটা তাদের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরা যে অর্জন পেয়েছি সেই অর্জন আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে। কারণ ১৫-১৬ বছর এক নিষ্ঠুর এবং দানবীয় সরকারের রোষানলের মধ্যে নিপীড়ন নির্যাতনের মধ্যে এদেশের মানুষ দিন কাটিয়েছে, রাত কাটিয়েছে। সেই দুর্বিষহ দুঃস্বপ্ন যাতে আর না ফিরে আসে তার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি করে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার পথ যাতে সুগম না হয়। কারণ এই ১৫-১৬ বছরে জাতিকে অনেক খেসারত দিতে হয়েছে।
সুখরঞ্জন বালি ইস্যুতে রিজভী বলেন, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী কোনো অপরাধী নয় বলে সুখরঞ্জন বালি দাবি করলেও শেখ হাসিনা জোর করে সুখরঞ্জনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। তাকে দেশ থেকে চলে যেতে বাধ্য করেছিল।
তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য জ্বালাও পোড়াও করে নিজেই তা ক্ষমতায় এসে বাতিল করেছে শেখ হাসিনা। দ্বিচারিতার উদাহরণ শেখ হাসিনা।
মন্তব্য (০)