
পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়াও অপর গ্রুপ অবস্থান নেওয়ায় শহরে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করে। তবে পুলিশের শক্ত অবস্থানের জন্য বড় ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানা গেছে।
শনিবার (০৫ জুলাই) সকালে যুবদলের বদবঞ্চিত নেতা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তসলিম হাসান খান সুইটের নেতৃত্বে যুবদলের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিতদের ব্যানারে শহরের মহিষের ডিপু থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে টেকনিক্যাল মোড় হয়ে শহীদ মিনারে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলে যুবদলের কমিটি মানি না মানব না, হিমেলের দুইগালে জুতা মারো তালে তালে, মনিরের দুইগালে জুতা মারো তালে তালে। অবৈধ পকেট কমিটি মানি না মানব না ইত্যাদি শ্লোগান দেন।
এরপর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তসলিম হাসান খান সুইট, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রানা, বুলবুল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন রাফসান, পাবনা জেলা যুবদলের সাবেকসহ প্রচার সম্পাদক বাহার হোসেন, জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ন সম্পাদক বাপ্পী সরদার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিগত তিন বছর ধরে দুই সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে জেলা যুবদল পরিচালিত হয়েছে।
সম্মেলনের মধ্য দিয়ে কমিটি গঠন না করে তিন বছর পরে একটি মহল পুনরায় পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটিতে আন্দোলন-সংগ্রামের পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে একতরফা কমিটি করা হয়েছে। দ্রুত এই কমটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাদের কমিটিতে পদ দেওয়ার আহ্বান জানান পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীরা। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
এর আগে যুবদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে পাবনা সরকারি কলেজের সামনে তসলিম হাসান খান সুইটের লোকজন অবস্থান নেয়। এসময় যুবদলের আহবায়ক হিমেল রানার লোকজন র্যালী নিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এময় পুলিশী তৎপরতায় দুইগ্রুপের সংঘর্ষের মত ঘটনা ঘটেনি। যুবদলের কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে মিছিলটি শহরের শহীদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে আব্দুল হামিদ সড়ক সহ বিভিন্ন সড়ক পদক্ষিণ করে আবার শহীদ চত্বরে এসে শেষ হয়।
এরপর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে যুবদলের আহবায়ক ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানা, সদস্য সচিব মনির হোসেন সহ উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ থেকে দাবি করা হয়, একটি কুচক্রী মহল যুবদলের কমিটি বাতিলের জন্য ষড়যন্ত্র করছে। ত্যাগী কর্মী দিয়েই কমিটি করা হয়েছে।
পাবনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তসলিম হাসান খান সুইট অভিযোগ করে বলেন, গত তিনদিন আগে সিন্টু নামের একজন মিছিল করেছে যুবদলের ব্যানারে। কোরআন ছুঁয়ে বলতে পারি ও জীবনেও বিএনপির রাজনীতি করেনি। ও মামুনের সঙ্গে যুবলীগ করেছে। অনেকগুলো ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী যুবলীগের লোক দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। যেটাকে আমরা পকেট কমিটি বলি। শুধু তাই নয় ইয়াবা ব্যবসায়ী, হিরোইন ব্যবসায়ী সহ নানা অপরাধে জড়িতদের দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। আওয়ামী আমলে ৫/৭ জন নিয়ে মিছিল করলেও এখন শতশত লোক নিয়ে তারা মিছিল করেছে। এই কমিটি দ্রুত বাতিল করতে হবে। তাছাড়া বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
পাবনা জেলা যুবদলের আহবায়ক ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানা বলেন, আসলে তারাতো তারেক রহমানের মত স্বচ্ছ রাজনীতি করেনা। এজন্য তারা পদ পায়নি। ত্যাগী কর্মীদের দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। সে তো আওয়ামী লীগের লোকজনকে নিয়ে চলাফেরা করে। আসলে আমরা চেয়েছি পাবনাতে ভালো কিছু হোক। এখানে বিশৃঙ্খলা করার দরকার নেই তো। আপনারা স্বচ্ছ রাজনীতি করেন এরপর আপনারা কমিটিতে আসতে পারবেন।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, সকাল থেকেই শহরে দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। পুলিশী তৎপরতায় বড় ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
গত জুন মাসের ২৬ তারিখে ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানাকে আহবায়ক ও মনির হোসেনকে সদস্য সচিব করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি করে প্রেসনোট দেওয়া হয়।
মন্তব্য (০)