
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি টিকটক কিনতে প্রস্তুত থাকা ‘অত্যন্ত ধনী ব্যক্তিদের’ একটি দলকে সাথে পেয়েছেন, যাদের পরিচয় তিনি প্রয়োজনে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করতে পারবেন। রোববার ফক্স নিউজে সম্প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।
ট্রাম্প আরও জানান, এই চুক্তি এগিয়ে নিতে বেইজিংয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হতে পারে, তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার মনে হয় প্রেসিডেন্ট শি (জিনপিং) এটি অনুমোদন করবেন।’
ফক্স নিউজের ‘সানডে মার্নিং ফিউচারস উইথ মারিয়া বার্তিরোমো’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প চীনের পণ্যের ওপর ‘পারস্পরিক’ শুল্কের সম্ভাব্য বিরতির প্রসঙ্গ তুলতে গিয়ে টিকটক নিয়ে এই মন্তব্য করেন।
২০২৪ সালে পাস হওয়া একটি আইনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ওই আইন অনুযায়ী, চীনা মালিকানা থেকে আলাদা না হলে টিকটককে নিষিদ্ধ করার বিধান রাখা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কা, চীনা সরকার টিকটক ব্যবহারকারীদের তথ্যের অপব্যবহার করতে পারে এবং কনটেন্টে প্রভাব ফেলতে পারে।
চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প বাইটড্যান্সকে (টিকটকের মূল কোম্পানি) মার্কিন ব্যবসা থেকে তাদের মালিকানা বিক্রির জন্য সময়সীমা বাড়িয়ে সেপ্টেম্বর ১৭ পর্যন্ত করেছেন। এটি তার তৃতীয় বর্ধিত সময়সীমা, যা তিনি দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েকদিন আগে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আইন বহাল থাকার পর ঘোষণা করেছিলেন।
টিকটক অ্যাপটি পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগেই যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তবে ট্রাম্পের আশ্বাসের পর তা আবার চালু হয়।
ট্রাম্প, যিনি গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের মধ্যে তার সমর্থন বৃদ্ধির জন্য টিকটককে আংশিক কৃতিত্ব দেন, বলেছেন তিনি চান প্ল্যাটফর্মটি নতুন মালিকানার অধীনে চালু থাকুক।
টিকটকের সম্ভাব্য ক্রেতাদের মধ্যে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ওরাকলের ল্যারি এলিসন, অ্যাপলাভিন, এবং পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মতো কোম্পানির নাম শোনা যাচ্ছে।
তবে বাইটড্যান্স টিকটক বিক্রি করবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। সম্ভাব্য বিক্রির আগে চীনা সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন হতে পারে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে একটি প্রস্তাবিত চুক্তিতে টিকটকের মার্কিন শাখা আলাদা করে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছিল, যেখানে বাইটড্যান্সের ছোট একটি অংশ ধরে রাখার সুযোগ থাকত। কিন্তু ওই সময় ট্রাম্পের চীনের পণ্যের ওপর নতুন শুল্কের ঘোষণা আসার পর সেটি আটকে যায়।
ট্রাম্প এর আগে প্রস্তাব করেছিলেন, মার্কিন বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটি কিনে নিলে এর ৫০ শতাংশ শেয়ার মার্কিন সরকারের কাছে বিক্রি করে যৌথভাবে পরিচালনা করা যেতে পারে।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য যেকোনো চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের আইনের আওতায় বৈধতা পাবে কিনা, তা ‘পিএএফএসি’ আইন অনুসারে নির্ভর করবে এবং আদালতেও এর আইনি চ্যালেঞ্জের সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে, যা শুধু প্রযুক্তি খাতেই নয়, যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক এবং বৈশ্বিক রাজনৈতিক অর্থনীতির উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
মন্তব্য (০)