• বিনোদন

কালো জাদুই কি কেড়ে নিল তানিনের প্রাণ?

  • বিনোদন

ছবিঃ সংগৃহীত

বিনোদন ডেস্কঃ  আপনি কি কখনও এমনটা অনুভব করেছেন—কেউ যেন আপনাকে অনুসরণ করছে, অথচ পেছনে ফিরে তাকালে কেউ নেই? কখনো কি শুনেছেন কোনো অদ্ভুত কণ্ঠস্বর, অথচ চারপাশে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা? কিংবা এমন কিছু দেখেছেন বা অনুভব করেছেন যা কোনো যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করা অসম্ভব?

যদি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর হয় ‘হ্যাঁ’, তাহলে আপনি হয়তো এমন এক রহস্যময় শক্তির প্রভাবে রয়েছেন, যাকে আমরা চিনি “কালো জাদু” নামে—হাজার বছর ধরে মানবজাতিকে ভীত ও বিভ্রান্ত করে আসা এক অদৃশ্য শক্তি।

কালো জাদু হলো এমন এক ধরনের চর্চা যা অন্যের অনিষ্ট সাধনে কিংবা নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্যে করা হয়। এটি অতিমানবিক ও অশুভ শক্তির সংশ্লিষ্টতা। কালো জাদু সাধারনত অতিমানবিক শক্তি দ্বারা করা হয়। তবে অনেকে বলেন এতে ভূত, প্রেত, আত্মা, প্রেতাত্মা ব্যবহার করা হয়।

আধুনিকতার যুগে এখন বেশির ভাগ মানুষই কালো জাদু, কুসংস্কার— এসবে বিশ্বাস করেন না। তবে পবিত্র কোরআনে এবং হাদিসে কালো জাদুর অস্তিত্ব স্পষ্টভাবে স্বীকৃত। সূরা বাকারা-তে বলা হয়েছে:

“তারা সেই জিনিসের অনুসরণ করল যা সুলাইমানের রাজত্বকালে শয়তানরা আবৃত্তি করত… আর আল্লাহ বলেন, ‘হারুত ও মারুত’ নামে দুই ফেরেশতা বাবেল নগরীতে মানুষকে জাদুবিদ্যা শেখাতেন পরীক্ষা স্বরূপ।” (সূরা বাকারা, আয়াত ১০২)

এমনকি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-ও একবার কালো জাদুর শিকার হয়েছিলেন। লাবিদ ইবনে আ’সাম নামে এক ইহুদি জাদুকর তার ব্যবহৃত চিরুনি ও চুল নিয়ে খেজুর গাছের খোসায় মুড়িয়ে একটি কূপে নিক্ষেপ করেছিলেন। পরবর্তীতে সেখান থেকে ১১টি গিঁটসহ এক সুতা উদ্ধার করা হয়। প্রতিটি গিঁট খুলতে খুলতে মহানবী (সা.) সূরা ফালাক ও নাস পড়েন, এবং ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

পত্রিকা কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই এমন কালো জাদু নিয়ে নানা সংবাদ দেখা যায়। যেখানে কেউ তার নিজের স্বার্থ হাছিলের জন্য অন্যজনকে এই জাদুর মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে নিয়ে গিয়েছে। এমন এক ঘটনার সাক্ষী হলো ঢাকাই সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি। দীর্ঘ আট দিন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকার পর না ফেলার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন নায়িকা তানিন সুবহা (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (১০ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৫৭ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

তানিনের অকাল মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় এসেছে তার তাবিজ-কুফরির প্রতি একসময়ের অবিশ্বাস থেকে পরে বিশ্বাস জন্মানোর কথা। কেননা তিনি এর শিকার বলে মনে করতেন।

১৯ মে একটি ফেসবুক পোস্টে নিজের শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা জানানোর পাশাপাশি তার তাবিজ-কবজের প্রতি বিশ্বাস জন্মানোর প্রসঙ্গও আনেন তানিন সুবহা। সেটি নিয়েই এখন নেটিজেনদের মধ্যে আলোচনা।

ফেসবুক পোস্টে তানিন সুবহা লেখেন, কোনোদিন আমি তাবিজ বা কুফরিতে বিশ্বাস করতাম না। এখন করি। সুস্থ একটা মানুষকে এভাবে মেরে ফেলার চেষ্টা করে কি লাভ? ঘরের আনাচে কানাচে কত কি যে পেলাম। কেন এমন করছেন! আমি তো কারো ক্ষতি করিনি। লাস্ট ৪ মাস ধরে শুধু অসুস্থ আর অসুস্থ আমি। এসব এর ফল পাবেন চিন্তা কইরেন না। আল্লাহ ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেয় না।

এই পোস্টের কিছুদিন পর, ২ জুন তানিন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।

তানিন সুবহার মৃত্যু এবং এর আগে তার ওই পোস্টকে অনেকে কাকতালীয় বলছেন। আবার কেউ কেউ এর পেছনে অন্য কিছু থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। এ নিয়ে তদন্তের আহ্বানও জানিয়েছেন কেউ কেউ।

এদিকে বিভিন্ন সূত্র আরটিভিকে জানিয়েছেন, তানিনকে কালো জাদু করা হয়েছে। সে বিভিন্ন সময় তার বাসা থেকে নানা ধরণের তাবিজ পাওয়া গিয়েছে। শুধু তাই নয় তাদের দাবি তানিনের ব্রেনে দুইটি বান দেয়া হয় তার মস্তিস্কের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার জন্য, যার ফলশ্রুতিতেই লাইফ সাপোর্টে থাকার সময় হুট করেই তার ব্রেইন কাজ করা বন্ধ করে দেয়। যদিও তখন তার হার্ট কিছুটা সচল ছিল। 

তানিনের দেয়া স্ট্যাটাস ও সার্বিক পরিস্থিতি দেখে তার কাছের অনেকেই মনে করছেন তানিনের মৃত্যু কালো জাদুর প্রভাবেই হয়েছে।

বরিশালের গৌরনদীর মোল্লারহাটের মেয়ে তানিন সুবহার মিডিয়াতে অভিষেক ঘটে আজাদ কালামের পরিচালনায় ‘যমজ’ নাটকে মোশাররফ করিমের বিপরীতে। এরপর তিনি মীর সাব্বিরের ‘আলাল দুলাল’, সেলিম রেজার ‘শেয়ানা জামাই’, নাহিদ হাসানের ‘ম্যারেজ মিডিয়া ডটকম’, মুশফিকুর রহমান গুলজারের ‘আরতির পতাকা’সহ আরো বেশ কিছু খণ্ড নাটকে অভিনয় করেছেন। 

নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তানিন। ‘মাটির পরী’ সিনেমার মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষেক হয়। এরপর অবশ্য কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। আর বর্তমানে তার অভিনীত কয়েকটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায়। অভিনয়ের পাশাপাশি একটি পার্লার গড়ে তুলেছেন তানিন সুবহা।

 

মন্তব্য (০)





  • company_logo