• উদ্যোক্তা খবর

নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হলো “বাংলাদেশ ইয়ুথ সিম্পোজিয়াম ২০২১”

  • উদ্যোক্তা খবর
  • ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ১১:২৪:০৩

ছবিঃ সিএনআই

নিউজ ডেস্ক:  এক ঝাঁক উদ্যোমী এবং তরুণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে “ইয়ুথ স্কুল ফর স্যোসাল এন্ট্রাপ্রেনারস” প্রতিবছরই “বাংলাদেশ ইয়ুথ সিম্পোজিয়াম” এর আয়োজন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ এ নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় আয়োজিত হলো “বাংলাদেশ ইয়ুথ সিম্পোজিয়াম ২০২১”, যেখানে তরুণ শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপনের পাশাপাশি ব্যবসায় উদ্যোগ সম্পর্কিত নানাধরনের বাস্তবমুখী জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পায়। সিম্পোজিয়ামের ই- লার্ণিং পার্টনার হিসেবে ছিল- Shikhbe Shobai, স্ট্যাটিজিক পার্টনার হিসেবে ছিল rokomari.com, এডুকেশন পার্টনার ছিল Interactive cares, মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল The Daily Star, ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল CNI(Cable News Intetnational) এবং ছিল রেডিও পার্টনার হিসেবে ছিল Dhakafm . 

করোনার কারনে সিম্পজিয়ামটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফেব্রুয়ারী মাসের মাহাত্ম্যকে স্মরণ করে, জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। সিম্পোজিয়াম এর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর আতিউর রহমান। তিনি তার বক্তব্যের শুরুতেই বর্তমান তরুণ উদ্যোক্তাদের সফলতা তুলে ধরেন এবং তাদের ধন্যবাদ জানান অভিনব উদ্যোগগুলো নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য। তিনি বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারী উদ্যোক্তারা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয় সেসব তুলে ধরার পাশাপাশি সেগুলোর সমাধান নিয়ে আমাদের ধারনা দেন। সব শেষে তিনি বর্তমান তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, “তারুন্যই আমাদের বড় সম্পদ এবং তরুণদের নিয়েই বাংলাদেশ সফল পথে এগিয়ে যাবে।” অনুষ্ঠানের রিসোর্স পার্সন হিসেবে আমাদের সাথে ছিলেন ডন সামদানি ফ্যাশিলিয়েশন এর সিইও গোলাম ডন সামদানি।

তিনি তার বক্তব্যের মাধমে বর্তমান তরুণদের জন্য করোনা পরবর্তী সময় নিয়ে কিছু বাস্তবমুখী উপদেশ তুলে ধরেন। তিনি তরুণদের বেসিক স্কিলগুলোর ব্যাপারে খেয়াল রাখার পাশাপাশি আরও ৫ টি বিষয়ে আলোকপাত করেন- Tech savyness, quick learning, adaptability & flexibility skill, critical thinking,
communication & emotional intelligence. সেই সাথে সব শেষে তিনি তরুণদের মাঝে গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার গুরুত্ত্বের কথাও তুলে ধরেন।

তারপর রিসোর্স পারসন হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইসিই এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোঃ রাশেদুর রহমান। আইসিই এর মূল লক্ষ্য তুলে ধরে তিনি উদ্যোক্তা হওয়ার পথ বেছে নেওয়ার আগে তরুণদের করনীয় কাজগুলো উল্লেখ করেন। তিনি self assessment এর ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি তরুণদের উদ্দেশ্যে 4P এর ব্যাপারটা তুলে ধরেন। (4P-Purpose, Passion, Problem, Peace) অর্থাৎ তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার আগে নিজের Purpose অনুধাবন করে Passion এর জায়গা থেকে Problem গুলো তুলে ধরে সেগুলো সমাধানের মাধ্যমে নিজের Peace অনুধাবন করতে হবে। সেই সাথে উদ্যোক্তা হওয়ার ব্যাপারে যে ভ্রান্ত ধারনা গুলো
আছে সেগুলার ব্যাপারে সতর্ক হতে বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানের স্পেশাল গেস্ট হিসেবে আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন রবি এক্সিয়েটা লিমিটেড এর সিইও এবং এমডি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ। তিনি তার বক্তব্যের শুরুতেই নিজের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন এবং বর্তমান সফলতা নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করেন। Industrial revolution এর সাথে কর্মক্ষেত্রের ব্যাপার নিয়ে ধারনা দিয়ে তিনি তরুণদের স্কিল গড়ে তোলার ব্যাপারে গুরুত্ব দেন। সব শেষে তিনি তরুণদের প্রব্লেম সল্ভিং এর মানসিকতা তৈরির ব্যাপারেও কথা বলেন। সিম্পোজিয়াম এর গেস্ট অফ অনার হিসেবে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভিসি প্রফেসর ডক্টর. আনোয়ার হোসেন। বক্তব্যের
শুরুতেই তিনি বর্তমান সমাজের তরুণদের কর্মতৎপরতার প্রশংসা করেন। তিনি তরুণদের নিজের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে বলেন এবং সেই সাথে তিনি সকল বাধাকে সাময়িক হিসেবে বিবেচনা করে নিজের স্বপ্নকে সফল করতে উপদেশ দিয়েছেন।

সিম্পোজিয়াম এর প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপান সোসাইটি ফর প্রমোশন অফ সাইন্স(জেএসপিএস) এর রিসার্চ ফেলো সাদাফ তাইমুর এবং বিজনেস কনসাল্টিং ও অ্যানালাইটিকস এর ডিরেক্টর দিপাল জৈন। দিপাল জৈন স্যার শিক্ষাব্যাবস্থার উপর করোনার নেতিবাচক প্রভাবের ব্যাপারে আলোকপাত করেন এবং সেই সাথে আমদের উপমহাদেশে ডিজিটাল লার্নিং এর প্রভাব নিয়েও কথা বলেন। তিনি করোনার কারনে রাজস্ব উৎপাদনের স্বাভাবিক ধারায় কি পরিবর্তন এসেছে এই ব্যাপারেও আলোকপাত করেন। এই আলোচনার ধারাবাহিকতায় সাদাফ তাইমুর ম্যাম করোনাকালীন শিক্ষাব্যাবস্থার জটিলতা সমাধানের ব্যাপারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার তুলে ধরেন এবং কিভাবে বর্তমানে ই-লারনিং এর সঠিক ব্যাবহারের মাধ্যমে কিভাবে শিক্ষাব্যাবস্থাকে আরও উন্নত করা সম্ভব সেটাও উল্লেখ করেন। সেই সাথে তিনি করোনা পরবর্তী রাজস্ব উৎপাদন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানের এই পর্যায়ে সময় চলে আসে “এলিভেটর পিচ চ্যালেঞ্জ” এর। এই চ্যালেঞ্জে ৫ জন উদ্যোক্তা তাদের আইডিয়া গুলো শেয়ার করার জন্য দুই মিনিট করে সময় পান। এই অল্প সময়ের মধ্যে ভবিষ্যৎ তরুণ উদ্যোক্তারা তাদের ব্যাবসার ধারনা বিচারক এবং উপস্থিত সকলের মাঝে সফলভাবে তুলে ধরেন। প্রতিযোগিতার বিচারক মন্ডলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ওয়াইএসএসসি এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি শেখ মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
ট্রাস্টের ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ তিশা ফারহানা।

অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে আমদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর বেনজীর রহমান। তিনি প্রথমেই বর্তমান তরুণদের দেশের ভবিষ্যৎ হিসেবে উল্লেখ করে তাদের আইডিয়া নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে উপদেশ দেন। সেই সাথে তরুণদেরকে নিজের কাজকে সম্মান দেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন। সব শেষে টেকনলজির সঠিক ব্যাবহার এর মাধ্যমে নিজের স্কিল গড়ে তোলার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে তিনি তরুণদের এগিয়ে যেতে বলেন।

অনুষ্ঠানের এই পর্যায়ে আমাদের মাঝে উপস্থিত হন ওয়াইএসএসসি এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি শেখ মোহাম্মদ ইউসুফ হোসেন। তিনি ইয়ুথ স্কুল ফর স্যোসাল এন্ট্রাপ্রেনারস এর সার্বিক কার্যক্রম এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত করার যাত্রা নিয়ে সংক্ষেপে বক্তব্য রাখেন।

তারপরই প্রোগ্রামের মূল আকর্ষণ এলিভেটর পিচ চ্যালেঞ্জ এর ফলাফল সময় চলে আসে। বিচারক মন্ডলী প্রতিযোগীদের মধ্য থেকে চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত করেন রোকেয়া আখতার এবং রানার-আপ ঘোষনা করেন ঐন্দ্রিলা জামানকে। সবশেষে বাংলাদেশ ইয়ুথ সিম্পোজিয়াম ২০২১ এর আহ্বায়ক এ এইচ আকিব তার বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo