• অর্থনীতি

কৃষকদের আশার আলো দেখাচ্ছে বিদেশি জাতের সবজি ‘ব্রকলি’

  • অর্থনীতি
  • ১৬ জানুয়ারী, ২০২১ ১৭:২৩:৪১

ফাইল ছবি

নিউজ ডেস্কঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দিনদিন বাড়ছে অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিদেশি জাতের সবজি ‘ব্রকলি’ চাষ। সবুজ বর্ণের ফুলকপি পরিবারের সবজি এটি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভৈরবগঞ্জ বাজার, টিকরিয়া, মন্দিরগাঁও, আশিদ্রোণ ও সিঁদুরখাঁন ইউনিয়নসহ অনেক গ্রামে এবার ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে উন্নত জাতের ব্রকলি।

কৃষকরা জানান, বিদেশি জাতের সবজি ব্রকলি চাষ করে গত বছর সাফল্য পেয়েছিলেন তারা। নতুন জাতের সবজিতে সাধারণের আগ্রহ থাকায় অধিক মুনাফাও করেছিলেন। এবার অনেকেই ব্রকলি চাষ করে আশার আলো দেখছেন।

জানা যায়, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রোপণ করা হয় ব্রকলির চারা। ব্রকলি ক্রসিফেরী গোত্রের অন্তর্ভুক্ত শীতকালীন সবজি। এতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফোলেট, আঁশ আছে। ব্রকলির রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। ভিটামিন সি থাকায় এটি ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস হওয়ায় এটি হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করে। ব্রকলি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ভালো উৎস। এটি ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং কোলোস্টেরলের মাত্রা কমাতে ব্রকলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কথা শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভৈরব বাজার এলাকার কৃষক শামিম মিয়ার সাথে। তিনি জানান, তার ৩০ শতক জমিতে আর্লি ইউ জাতের ব্রকলি চাষ করেছেন। তিনি আরও বলেন, যদি চাইনিজ রেস্টুরেন্টগুলো ও অভিজাত হোটেলগুলো সরাসরি আমাদের কাছ থেকে ‘ব্রকলি’ ক্রয় করতেন তাহলে আমরা উপযুক্ত দাম পেতাম এবং এই উচ্চমূল্যের সবজিটি আগামীতে ব্যাপকহারে চাষ করতাম যা খুবই লাভজনক হতো আমাদের জন্য।

এ প্রসঙ্গে লাল তীর সীড লিমিটেড এর ডিভিশনাল ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী বলেন, ব্রকলি ক্রসিফেরি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত একটি কেবেজ পরিবারের আঁশ জাতীয় সবজি। এর আদি নিবাস ইতালিতে। পুষ্টিবিদদের মতে, ব্রকলিতে আয়রনের পরিমাণ অধিক থাকে তাছাড়াও সাতটি পুষ্টিগুনে ভরপুর ব্রকলি। ভিটামিন-সি বিটা ক্যারোটিন যা ক্যান্সার প্রতিরোধক ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, গ্যাস্ট্রিক প্রতিরোধে কার্যকরী। ত্বক সুন্দর করে এবং শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।

তিনি আরও বলেন, উচ্চমূল্যের এই সবজিটি আমরা গত বছর প্রদর্শনী আকারে কিছু বীজ দিয়েছিলাম কৃষক পর্যায়ে। যার ফলাফলে এই বছর ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এবছর মোটামুটি ভালো চাষ হয়েছে আমাদের ব্রকলি আর্লি ইউ নামে জনপ্রিয় এই জাতটি। এটির যদি বাজারজাতকরণের উপযুক্ত সুবিধা ও কৃষক ন্যায্য দাম পায় এবং উপযুক্ত খাদ্যাভ্যাস আমরা সমাজে তৈরি করতে পারি তাহলে এই সবজিটি একটি লাভজনক শীতকালীন সবজিতে রূপান্তরিত হবে বলে আমরা আশা করি।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, আমাদের একটা প্রকল্প আছে “ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি প্রজেক্ট।” এটা বিশ্বব্যাংক এর সহায়তায় প্রজেক্ট চলছে, এর মধ্যে গ্রেজেটে উচ্চ মূল্যে সিলেট অঞ্চলে ফসল চাষ করা হচ্ছে। যেহেতু সেটা একটু আনকমন ফসল, তাই ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এ ব্রকলি চাষ আমি প্রথম শুরু করেছি। যদিও ব্রকলি সাইজে তেমন বড় হয় না, কিন্তু দামে তো ভালো। কৃষকও অনেক লাভ করছে। এ ব্রকলি নিয়ে গতবছর আমি একটা প্রদর্শনী করেছি, এবছর ও প্রদর্শনী হবে। কৃষকদের ভালো বিক্রি হবার বিষয়ে তিনি বলেন, দরকার হলে আমি গ্র্যান্ড সুলতান বা আরো যে রেস্টুরেন্টগুলো আছে তাদের সাথে কথা বলবো।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo