• জাতীয়

হবিগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের পকেট সরকারি বরাদ্দের বস্তা

  • জাতীয়
  • ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০ ২০:০৫:০২

সিএনআই ডেস্ক: হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে গ্রামীণ অবকাঠামোর একটি রাস্তায় ৪ বার নাম পরিবর্তন করে। একই রাস্তার নাম পরিবর্তন করে ৪ বারে সরকারি বরাদ্দের প্রায় ২০ লাখ টাকা লুটপাটের রাজ্যে ভোগ হয়েছে। এলাকাবাসীর মাঝে এ নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাগাপাশা ইউনিয়নের চমকপুর গ্রামে। ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীকেও হুমকি-ধামকির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ইতিমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান বিভিন্ন স্থানে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন খন্দকার জানান, একই রাস্তায় ৪ বার বরাদ্দ দিয়ে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। তারা তদন্তও শুরু করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নূরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি খবর নিয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তবে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয়রা জানান, কিছু মাটি ভরাট ছাড়া ওই রাস্তায় তেমন কোনো কাজ হয়নি। অধিকাংশ টাকাই চেয়ারম্যান নিজের লোকজন নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। একটি রাস্তারই ৪ বার নাম পরিবর্তন করে বরাদ্দ দিয়েছেন। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ। আজিজুল হাকিম নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, চেয়ারম্যান তার গ্রামে অত্যন্ত প্রভাবশালী। সেখানে প্রকাশ্যে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় না। কারণ কেউ কথা বললেই পরবর্তী সময়ে তার উপর হামলা, মামলা চালানো হবে। সে কারণে কেউই ঝামেলায় যেতে চায় না। তিনি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদ আলী একটি রাস্তায় বারবার বরাদ্দ দিয়েছেন। যে রাস্তার নাম দেখানো হয়েছে ‘আনন্দ বাজার হতে সরালিয়া হাটির জামে মসজিদ হয়ে সরালিয়া হাটির পূর্ব মাথা পর্যন্ত রাস্তা’ এ রাস্তাটির নামই একেক বার একেকটি দিয়ে তিনি টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন। শুধু তা-ই নয়, তার বিরুদ্ধে আরও অসংখ্য প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদ আলী জানান, অভিযোগ সত্য নয়। একই রাস্তায় বারবার বরাদ্দ দেয়া হয়নি। ভিন্ন ভিন্ন রাস্তায় বরাদ্দ দিয়ে কাজ করা হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রামে আমার প্রতিপক্ষ গ্রুপ আছে। তারা আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের চমকপুর গ্রামে কর্মসৃজন প্রকল্প ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ‘আনন্দ বাজার হতে সরালিয়া হাটির জামে মসজিদ হয়ে সরালিয়া হাটির পূর্ব মাথা’ পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য ১১ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। একই অর্থবছরে ওই রাস্তার নাম পরিবর্তন করে ‘চমকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সরালিয়া হাটির জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণে’ টিআর প্রকল্পের আওতায় ৬১ হাজার ৯২৭ টাকা বরাদ্দ নেয়া হয়। ওই রাস্তাটিরই আবার নাম পরিবর্তন করে ‘আনন্দ বাজার থেকে সরালিয়া হাটি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে’ কাবিটা প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ দেয়া হয় ২ লাখ ৯৯ হাজার ১৪৫ টাকা। একই বছর কর্মসৃজন প্রকল্প থেকে একই রাস্তার নাম পরিবর্তন করে ‘আনন্দ বাজার উকিল মিয়ার দোকান থেকে চমকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা’ নির্মাণে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। আর এ সবই করেন কাগাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদ আলী। একই রাস্তায় বারবার বরাদ্দ দেয়া হয় মোট ২০ লাখ টাকা।

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo