• অপরাধ ও দুর্নীতি

জঙ্গি সংগঠন আল্লাহর দলের মূল উদ্দেশ্য ‘নাশকতা-সরকারকে উৎখাত’

  • অপরাধ ও দুর্নীতি
  • ২৮ আগস্ট, ২০১৯ ১৬:৫২:৩৫

দেশে ধ্বংসাত্বক কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দল’ বা ‘আল্লাহর সরকারের’। তাদের সদস্য সংখ্যা ব্যাপক। গ্রাম পর্যায় থেকে শহর পর্যায়ে রয়েছে সদস্য। তাদের মতো এত ঐক্য অন্য কোনও জঙ্গি সংগঠনে দেখা যায়নি। সংগঠনটির বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা নাশকতা করতে অস্ত্র কেনার পরিকল্পনাও করছিল। তাদের মূল লক্ষ্য অনুকূল পরিবেশে দেশের মধ্যে ব্যাপক নাশকতায় লিপ্ত হয়ে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করা। আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবা সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্ণেল সারওয়ার-বিন-কাশেম। তার আগে, বুধবার ভোরে রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে করে জঙ্গি সংগঠন ‘আল্লাহর দল’ বা ‘আল্লাহর সরকারের’ চার সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- জঙ্গি সংগঠনটির যুগ্ম-অধিনায়ক সিরাজুল ইসলাম সেহেরুল মৃধা (৩৮), উপ-অধিনায়ক মনিরুজ্জামান মনির (৪০), জেলা নায়ক এসএম হাফিজুর রহমান সাগর (৪৫) ও আঞ্চলিক নায়ক শফিউল মোযনাবীন তুরিন (২৭)। এ সময় তাদের নিকট থেকে উদ্ধার করা হয় তিনটি পেনড্রাইভ, ১২টি মোবাইল ফোন, সংগঠনের লিফলেট, দাওয়াতপত্র ও আয়-ব্যয়ের হিসাব সম্বলিত টালি খাতা। সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, ‘জঙ্গি সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মতিন মেহেদী প্রথমে আল্লাহর দল গড়ে তুললেও পরে জেএমবির সঙ্গে জড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালায়। তারে মধ্যে ধ্বংসাত্বক পরিকল্পনা রয়েছে। তাদের সংগঠনের মূল লক্ষে লেখা আছে- আমরা আমাদের ঐক্য চালিয়ে যাবো, যেকোনও মুহুর্তে সুযোগ পেলে বর্তমান শাসন ব্যবস্থাকে উৎখাত করার চেষ্টা করব। এরা আমাদের পরবর্তী মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে মনে করেন র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।’ সারওয়ার-বিন কাশেম বলেন, ‘জঙ্গি সংগঠনটির মোটা অঙ্কের টাকার অনেকগুলো ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। গ্রাম পর্যায় থেকে তারা দীর্ঘদিন ধরে টাকা সংগ্রহ করছে। ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষকে উৎসাহিত করে টাকা সংগ্রহ করেছে। এসব টাকা দিয়ে তারা অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা করছিল। কিন্তু লাইন না পাওয়ায় সফল হতে পারেনি। সম্প্রতিক সময়ে অনেকে গ্রেফতারও হয়েছে। তাদের সদস্য সংখ্যা ব্যাপক কিন্তু সেটা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। চেষ্টা চলছে সদস্য সংখ্যা জানতে।’ তিনি বলেন, ‘‘১৯৯৫ সালে জঙ্গি মতিন মেহেদী আল্লাহর দল নামক জঙ্গি সংগঠনটি গড়ে তোলে। ২০১৪ সালে মতিন মেহেদীর গোপন নির্দেশে এটি ‘আল্লাহর সরকার’ নামকরণ করা হয়। এই সংগঠনটি গণতন্ত্র ও বাংলাদেশের সংবিধানে বিশ্বাসী নয়। তাদের মূল লক্ষ্য অনুকূল পরিবেশে দেশের মধ্যে ব্যাপক নাশকতায় লিপ্ত হয়ে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করা। তারা সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সর্বোচ্চ পদকে ‘তারকা’ হিসেবে চিহ্নিত করে। এছাড়া কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পর্যায়ক্রমে রয়েছে অধিনায়ক, অতিরিক্ত অধিনায়ক, উপ-অধিনায়ক, যুগ্ম অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক, নিয়ন্ত্রক, নির্বাহী। এছাড়া আঞ্চলিক কাঠামোতে রয়েছে বিভাগীয় নায়ক, জেলা নায়ক, থানা নায়ক, গ্রাম নায়ক এবং সদস্য।’’ র‍্যাব জানায়, ‘তারা মনে করে বর্তমানে যুদ্ধাবস্থা চলছে বিধায় তারা ঈদ, কোরবানী, হজ্ব ইত্যাদি পালন করে না। জুম্মার নামাজও তারা আদায় করে না এবং প্রতি ওয়াক্তের শুধুমাত্র ২ রাকাত নামাজ আদায় করে। বর্তমান সময়ের জন্য জঙ্গি মতিন মেহেদি আল্লাহর বিশেষ দূত হতে পারে। আমরা সংগঠনটির বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সন্ধান পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে সেগুলো নাম বলছি না।’

মন্তব্য ( ০)





  • company_logo