ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে নিখোঁজের একদিন পর মিজান শেখ (২৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের রূপাপাত বামনচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের পিছনে নিমাই কুলুর মেহগনি বাগান থেকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের রূপাপাত গ্রামের আহমেদ শেখের ছেলে। পেশায় তিনি একজন নির্মাণ শ্রমিক ছিলেন।
এর আগে গত বুধবার (২ আগস্ট) বিকেল থেকে মিজান শেখ নিখোঁজ ছিলো। শুক্রবার (৪ ই আগস্ট) লাশ ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের মা নিহার বেগম (৫২) বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা করেছেন। শুক্রবার বিকেলে ফরিদপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) শৈলেন চাকমা এবং বোয়ালমারী থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের রূপাপাত গ্রামের আহমেদ শেখের ছেলে মিজান শেখ বুধবার বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। তারপর থেকে পরিবারের লোকজন তাঁকে খুঁজতে বের হয়। পরিবারের সদস্যরা নিহতকে আত্মীয় বাড়িসহ কোথাও খুঁজে পাচ্ছিল না তাকে। ব্যক্তি জীবনে তিনি দুই বিয়ে করলেও তার কোন সন্তানাদি ছিলো না। এমনকি দুই স্ত্রীর সাথে তার বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রূপাপাত বামনচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের পিছনে নিমাই কুলুর মেহগনি বাগানে স্থানীয়রা তার মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানার ডহরনগর ফাঁড়ি ইনচার্জ আজাদুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মিজানের মৃতদেহ উদ্ধার করে। তবে মরদেহের শরীরে মারাত্মক জখমের চিহ্ন রয়েছে এবং তার ডান চোখ উপড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। শুক্রবার লাশ ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনায় নিহতের মা নিহার বেগম (৫২) বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা করেছেন।
বোয়ালমারীর রূপাপাত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কলেজ শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, বুধবার থেকে মিজানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। তিনি জানান, তারা দুই ভাই-বোন। বিয়ে করলেও মিজানের পারিবারিক জীবনে স্ত্রী বা কোন সন্তানাদি নেই।
লাশ উদ্ধারকারী ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ডহরনগর তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক কবির আহমেদ জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ফাঁড়িতে এনেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার ডান চোখ উপড়ানো পাওয়া গেছে।
শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী বোয়ালমারী থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব জানান, লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ নিহতের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি বুধবার বিকেল থেকে মিজান নিখোঁজ ছিলো। তবে নিখোঁজের ব্যাপারে কেউই থানায় লিখিত বা মৌখিকভাবে কিছুই জানায়নি। বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে মরদেহের প্রাথমিক সুরতহাল শেষে শুক্রবার ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা নিহার বেগম (৫২) বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে মামলা করেছেন। দোষীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য ( ০)